বারো মুখী রুদ্রাক্ষের উপকারিতা ও ব্যবহার বিধি !

12 mukhi-rudraksha-benefits

রুদ্রাক্ষ সম্পর্কে আমরা অনেকেই কম বা বেশী জানি। রুদ্রাক্ষ কথার অর্থ রুদ্রের অক্ষ! অর্থাৎ ভগবান শিবের চোখ। পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে রুদ্রাক্ষ ভগবান শিবের অত্যন্ত প্রিয় বস্তুর মধ্যে একটি। আমরা যদি ঈশ্বরের বিশ্বাসী হই। যদি ভগবান শিবকে আরাধ্য বলে মনে করি, তাহলে রুদ্রাক্ষর গুরুত্ব কিন্তু আমরা কোনভাবেই অস্বীকার করতে পারি না। আসলে রুদ্রাক্ষ স্বয়ং ভগবান শিবের প্রতিরূপ! ভগবান শিব সকল দেবতার আরাধ্য। তাই রুদ্রাক্ষ যদি সঠিক বিধি অনুযায়ী ধারণ করা যায়, তাহলে অবশ্যই ভগবান শিবের সঙ্গে অন্যান্য দেবতারও আশির্বাদ লাভ হবে।  


মুল ভূখণ্ডে ১( এক থেকে একুশ) থেকে ২১ মুখী পর্যন্ত রুদ্রাক্ষ পাওয়া যায়। যার মধ্যে ১ থেকে ১২ মুখী পর্যন্ত রুদ্রাক্ষ সহজলভ্য। এবং ১৩ থেকে ২১ মুখী রুদ্রাক্ষ কিন্তু দুর্লভ এবং এর মূল্য হাতের নাগালের বাইরে। তবে ২ থেকে ৫ মুখী রুদ্রাক্ষ পর্যন্ত বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে সহজেই পাওয়া যায়,এর মুল্য খুবই সাধারণ। আপনি হয়তো ভাবছেন কত মুখী রুদ্রাক্ষ ধারণ করা আপনার জন্য শুভ হবে? এক্ষেত্রে আমি বলবো, আপনি যেকোনো রুদ্রাক্ষ ধারণ করতে পারেন, তবে প্রতিটি রুদ্রাক্ষের মধ্যেই বিশেষ ভিন্ন ভিন্ন গুন আছে, যা আমি প্রতিটা পর্বে অতি সংক্ষেপে আলোচনা করবো। তবে একটা কথা নিশ্চিত যে, রুদ্রাক্ষ কখনো অশুভ ফল দান করে না।



আজকে আমি ১২ মুখী রুদ্রাক্ষ নিয়ে আলোচনা করবো। দ্বাদশ আদিত্য ও শনির কেন্দ্র বিন্দু হলো এই ১২ মুখী রুদ্রাক্ষ। এর অধিষ্ঠাতা দেবতা সূর্য। নিয়ন্ত্রক গ্রহ রবি।

surya namaskar


আমাদের সকলের প্রতিদিন নিয়ম করে সূর্য্য প্রনাম করা উচিত। কারণ এই সূর্য্যই পরম ব্রহ্ম পরমাত্মা, ও একমাত্র প্রত্যক্ষ দেব।  এই জগতের পালনকর্তা, নারায়ণ স্বরূপ।


মন্ত্র - ওঁ জবা কুসুম শঙ্কাসং কাশ্যপেয়ং মহাদ্যুতিম্ 

ধ্বন্তারিং সর্ব পাপঘ্ন প্রণতোহুস্মি দিবাকরম্ ।।


দ্বাদশ মুখী রুদ্রাক্ষ ধারণকারীর রোগ, শোক, ভয়, ভ্রম কোনো কিছুই থাকে না, কোনো দুষ্ট ব্যক্তি চাইলেও তার ক্ষতি করতে পারে না। সকল দেবতার দৃষ্টি তার প্রতি নিবন্ধ থাকে। কেউ যদি গোপনে কালা জাদু দ্বারা ক্ষতি করতে চায়, তহলেও এই রুদ্রাক্ষের গুনে তা একপ্রকার অসম্ভব হয়ে পড়ে। বরং কখনো কখনো উল্টোটাই হয়, যে ক্ষতি করতে চায়, উল্টে তারই ক্ষতি হয়ে যায়। এই ১২ মুখী রুদ্রাক্ষ ধারণে ব্যক্তির নাম যশ খ্যাতি, জ্ঞান, বুদ্ধি, ধন, ও বৈভব বৃদ্ধি পায়।

এই রুদ্রাক্ষের প্রভাব যে কত খানি, তার একমাত্র ধারণকারী বুঝতে পারবে। তবে এই রুদ্রাক্ষ কিন্তু ধারণ করার পূর্বে অবশ্যই শুদ্ধ করে নিতে হবে।

12 mukhi rudraksha benefits



প্রত্যহ নিয়ম করে সূর্য্য প্রনামের আমাদের প্রতিদিনের নিত্যকর্ম শুরু করা উচিত। তাতে আমাদের মানসিক দৃঢ়তা বৃদ্ধি পায়, ও কর্মে আগত সকল প্রকার বাধা দুর হয়।


রুদ্রাক্ষের শোধন ও প্রাণ প্রতিষ্ঠা পুজোর বিধি: শোধন প্রক্রিয়া হওয়া উচিত যেকোনো সোমবার। অথবা ভগবান শিবের বিশেষ দিনে।




শোধন প্রক্রিয়া শুরু করার পূর্বে যা করতে হবে তাহলো, -  পূজা স্থলে ঈশান কোণে অর্থাৎ উত্তর-পূর্ব দিক অথবা পূর্ব দিকে মুখে করে বসতে হবে। প্রথমে ভালো করে রুদ্রাক্ষটিতে চন্দনের প্রলেপ লাগিয়ে দিতে হবে, তারপর দুধ মিশ্রিত গঙ্গাজলে রুদ্রাক্ষটিকে ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এই ভাবে পরিষ্কার করার রুদ্রাক্ষটি শিব ঠাকুরের ছবি বা মূর্তির সামনে একটি পরিষ্কার কাপড়ের ওপর রাখুন। কারণ এমনটা বিশ্বাস করা হয়ে থাকে যে, দেবাদিদেব মহাদেবের নয়ন অশ্রূ থেকেই নাকি রুদ্রাক্ষের জন্ম হয়েছিল। অর্থাৎ রুদ্রাক্ষ ভগবান শিবের প্রতিক বা অংশ বিশেষ। তাই রুদ্রাক্ষের পুজো করা উচিত সর্বদা হবে ভগবান শিবের সামনে এবং শিব জ্ঞানে। প্রসঙ্গত, এক্ষেত্রে আরেকটা জিনিস মাথায় রাখা একান্ত প্রয়োজন। তা হল, রুদ্রাক্ষটি রাখতে হবে পরিষ্কার একটি কাপড়ের উপরে। তারপর জল, দই, দুধ, মধু এবং ঘিয়ের সাহায্যে শিব ঠাকুরের মূর্তি এবং রুদ্রাক্ষটি ভাল করে একসাথে স্নান করাতে হবে। এরপর ধুপ-ধূনো জ্বেলে পাঠ করতে হবে “ওম নম শিবায়” মন্ত্রটি। আর সব শেষে রুদ্রাক্ষের প্রকৃতি অনুসারে মন্ত্র জপ করে শেষ করতে হবে পুজো। 

12 mukhi rudraksha benefits

এর মন্ত্রটি হলো - ওম ক্রৌং ক্ষৌং রৌং নম: ।।



মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ভোজ্য পত্র কি ? আসল ও নকল ভোজ্য পত্র চিনবেন কিভাবে ?

স্বপ্ন দোষ ? কালসর্প দোষ ? বশীকরণ বা কর্মে সাফল্য চান? তাহলে জানুন ময়ুর পালকের কিছু অসামান্য গুনাগুন!