গৃহের সকল বাস্তু সমস্যার একমাত্র অব্যার্থ সমাধান এই টোটকা তে!
নিঃসন্দেহে একটি ভালো উদ্যোগ! কিন্তু কতটা ভালো? সত্যি কি এতে ঐ খেতে না পাওয়া দুঃস্থ শিশুদের কোনো উপকার হলো। আসুন একটু আলোচনা করে নেওয়া যাক....... । আমার মনে হয় সারা বছর দুবেলা দুমুঠো খেতে না পাওয়া দুঃস্থ বাচ্চা গুলো কে, শিবরাত্রির ঐ বিশেষ দিনে দুধের লোভ দেখিয়ে কোনো মহৎ কাজ হয় না। বরং এতে ওদের উপহাস করা হয়। শুধু তাই নয়, এই ধরনের বার্তা বা ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোষ্ট করে সম্পূর্ণ বিশ্বের কাছে নিজের দেশকে নগ্ন করার সামিল! আজকের দিনে দুধের দাম মহার্ঘ্য। পেট্রোল আর দুধের দামে রেসা রেসি চলছে। নব্বই দশকের গোড়ার দিকে একটি সন্দেশের দাম ছিল পঞ্চাশ (৫০)পয়সা থেকে এক (১) টাকা ! আজ তার দাম দশ(১০) টাকা । যদি দুঃস্থ শিশুদের জন্য দুধের ব্যবস্থা করতেই হয়, তাহলে সবার আগে উৎপাদনের দিকে জোর দিতে হবে। কিন্তু কি ভাবে? আমাদের সময়ে আগে স্কুলে গরুর রচনায় লিখতে হতো, গরু আমাদের কি উপকার করে, এবং তা থেকে আমরা কি কি পাই? আমার উত্তর ছিল খুব সাধারণ! দুধ আর গোবর। দুধ থেকে ঘী, মাখন, দই, ও ছানা তৈরি হয়, এবং সেই ছানা থেকে মিষ্টি তৈরি হয়। আর গোবর ব্যবহৃত হয় গৃহস্থের জ্বালানি ও কৃষিকাজে মাঠে সার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। আর বর্তমানে আরও যোগ হয়েছে, তাহলো - আমি নিজে নাই বা বললাম, আশা করি আপনারা এর উত্তর জানেন। যেমন ছাগলের ইংরেজি goat, বদলে হয়েছে Mutton ! ঠিক সেভাবেই গরুর ইংরেজি Cow, বদলে হয়েছে Beef !
আজ আমার টোটকার বিষয় হলো গরু বা গাভী, আরও ভালো করে বললে বলবো, সনাতন ধর্মে যে প্রাণীটি কে গোমাতা বলা হয়েছে। আপনারা উপরের প্রথম ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন। এই ছবিটিকেই আমরা গোমাতা বা কামধেনু বলে থাকি। এই ছবিটি আমাদের বাসস্থানের কোন দিকে কি ভাবে রাখলে এবং আমরা কি কি বাস্তু সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারি। আমি এই সব কিছু নিয়েই আজ আলোচনা করবো। তবে তার আগে গোমাতা সম্পর্কে কিছু কথা আলোচনা করে নেওয়া যাক।
সমুদ্র মন্থনে উত্থিত প্রাণী রত্ন গোমাতাপুরাণ অনুসারে এই কামধেনু থেকেই সম্পূর্ণ গো বংশের উৎপত্তি! আমরা পুরাণে বর্ণিত সমুদ্র মন্থনের কথা জানি। এই সমুদ্র মন্থনের ফলে তা থেকে যে, ১৪টি রত্ন প্রাপ্ত হয়েছিল, তার মধ্যে ৩টি ছিল প্রাণী রত্ন। যেমন ঐরাবত নামক একটি হাতি, উচ্চশ্রৈবা নামক একটি ঘোড়া, ও পাঁচটি গোমাতা রূপী কামধেনু! তাদের নাম যথা নন্দা বা নন্দিনী, সুভদ্রা, সুরভী, সুশীলা ও বহুলা। এই পাঁচটি গোমাতা রূপী কামধেনু সেবার দায়িত্ব ছিল পাঁচ জন ঋষির ওপর। যথাক্রমে তারা হলেন ঋষি জমদগ্নি, ভরদ্বাজ, বশিষ্ঠ, অসিত,আর গৌতম। আজকের সম্পূর্ণ গো বংশ, বেদ পুরাণে বর্ণিত গো মাতারই সন্তান।
আমাদের ভারতবর্ষ কৃষি প্রধান দেশ। এক সময়ে চারিদিকে সবুজের বাহার সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা ক্ষেত ছিল বিদ্যমান। দেশের ৮০_৮৫ শতাংশ মানুষ কৃষি কার্য্যে নিযুক্ত ছিল। সেই সময়ে প্রতিটি সচ্ছল কৃষক পরিবারেরই গো পালন ছিল। বলা ভালো ৯০ ( নব্বই) শতাংশ কৃষকই সচ্ছল ছিল। তাই বাধ্যতা নয়, প্রতিটি কৃষক পরিবারেরই গো পালন ছিল প্রয়োজন। চাষের কাজে ক্ষেতে হালের বা লাঙ্গলের প্রয়োজন ছিল। সেই কাজে পুরুষ গরু ( বলদ) ব্যবহার হতো। আজ সময় যত এগিয়েছে, বিজ্ঞান প্রভূত উন্নতি করেছে। সেই সাথে চাষের যোগ্য জমির পরিমাণ কমেছে, এবং উৎপাদন বাড়ানোর জন্য চাষের কাজে যত উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে, উন্নত যন্ত্রপাতি ব্যবহার হচ্ছে, সেই সঙ্গে গাভীর ব্যবহার কমে আসছে। আজকের তথাকথিত উন্নত যুগে গরুর যায়গায় হালের কাজে ট্রাক্টর ব্যবহৃত হয় কৃষকের সুবিধার জন্য। প্রযুক্তিগত উন্নতি হলেও কৃষকের কতটা উন্নতি হয়েছে, সেই প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যায়। বাস্তবে তার প্রতি ফলন কি, এবং আমরা কতটা পাই ! একটু আলোচনা করলেই বোঝা যাবে। প্রতিনিয়ত মূল্য বৃদ্ধির জেরে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস ওঠার যোগার। তাই সবকিছুর সাথে কৃষির খরচাও বেড়েছে বহুগুণ।
আমাদের পৃথিবী গোল, একদিক আলো হলে, অপর দিক অন্ধকার, এটা আমরা জানি। আমার মনে হয় এই কথাটা সর্ব ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। বিজ্ঞান যেমন আমাদের জন্য আশির্বাদ, কিন্তু আমরা এটাও অস্বীকার করতে পারি না, যদি বিজ্ঞানের অপব্যবহার হয়, তাহলে আমাদের জীবনে নেমে আসে চরম অভিশাপ! যাইহোক সবশেষে বলবো,যে গৃহের অঙ্গনে গো পালন হয়, এবং নিত্য গো সেবা করা হয়, সেখানে কোনো রকম বাস্তু দোষ থাকে না। সেই স্থান সকল দেব দেবীর বাসস্থান রূপে গন্য হয়। যদিও স্থানের অভাবে গো পালন সম্ভব না হয়, তাহলে সুযোগ পেলে অবশ্যই গো মাতার সেবা করুন। আর প্রতি বছর গোপ অষ্টমীর দিন অবশ্যই গো মাতার পূজা করুন।
তন্ত্র, জ্যোতিষ, ফেংশুই, ও বাস্তু সম্পর্কিত বিভিন্ন টিপস পেতে অবশ্যই আমাদের ইউটিউব চ্যানেল ( DHAR ARTS) কে সাবস্ক্রাইব করে রাখুন। সমস্ত আপডেট পেতে পাশের নোটিফিকেশন বেল আইকন টি প্রেস করুন।
ধন্যবাদ !
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন