রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয় উলু খাগড়ার প্রাণ যায়!

 


পশ্চিমবঙ্গের বামফ্রন্টের জমানায় একটা খুব কমন শব্দ ছিল! তাহলো আমরা-ওরা। হ্যাঁ বামফ্রন্ট সরকারের নেতা নেত্রীরা, নিজেদের সঙ্গে বিরোধী প্রসঙ্গ আলোচনায় আমরা ওরা উল্লেখ করতেন। এক্ষেত্রে ওরা বলতে বোঝায় বিরোধী দল। তৃণমূলের জমানাতেও কিন্তু এর কোন বিশেষ পরিবর্তন আমরা কিন্তু দেখতে পাই না। এখানে ওরা শব্দটি পরিবর্তিত হয়ে বহিরাগত হয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ বলতে পারি, যেমন বাঙালি - অবাঙালি,জয় হিন্দ - জয় বাংলা। তেমনই মা দুর্গা হলো বাঙালি, অর্থাৎ আমাদের নিজের, আর ভগবান রাম হলো অবাঙালি, অর্থাৎ বহিরাগত! সুতরাং এখানে বহিরাগতদের কোনো চান্স নেই। তাই এখানে নাকি ভগবান রামের নাম করা গুরুতর অপরাধ!


কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার জাতীয় সঙ্গীতের দ্বারা সম্পূর্ণ ভারত বর্ষকে একসুত্রে গেঁথে রেখেছেন। সাহিত্য সম্রাট বম্কিম চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সম্পূর্ণ ভারত বর্ষ কে মাতৃ রূপে বন্দনা করে তার বন্দে মাতরম্ গীত রচনা করেছেন। স্বামী বিবেকানন্দ তার বাণীতে বলেছেন -

                         মাঝের ব্যক্তি অন্ধ আম জনতার প্রতিক

নীচজাতি, মুখ, দরিদ্র, অজ্ঞ, মুচি, মেথর তোমার রক্ত, তোমার ভাই ! হে বীর, সাহস অবলম্বন কর ; সদৰ্পে বল—আমি ভারতবাসী, ভারতবাসী আমার ভাই । বল—মূর্খ ভারতবাসী, দরিদ্র ভারতবাসী, ব্রাহ্মণ ভারতবাসী, চণ্ডাল ভারতবাসী আমার ভাই ; তুমিও কটিমাত্ৰ-বস্ত্রাবৃত হইয়া, সদৰ্পে ডাকিয়া বল—ভারতবাসী আমার ভাই, ভারতবাসী আমার প্রাণ, ভারতের দেবদেবী আমার ঈশ্বর, ভারতের সমাজ আমার শিশুশয্যা, আমার যৌবনের উপবন, আমার বার্ধক্যের বারাণসী ; বল ভাই—ভারতের মৃত্তিকা আমার স্বৰ্গ, ভারতের কল্যাণ আমার কল্যাণ ; আর বল দিন-রাত, ‘হে গৌরীনাথ, হে জগদম্বে, আমায় মনুষত্ব দাও ; মা, আমার দুর্বলতা কাপুরুষতা দূর কর, আমায় মানুষ কর।’

এখন প্রশ্ন হলো আমরা কি মানুষ হতে পেরেছি? যদি সত্যি সত্যিই মানুষ হতাম, তাহলে রাজনৈতিক নেতা নেত্রীর উষ্কানি মূলক প্ররোচনায় পা দিয়ে নিজেদের মধ্যে খুনোখুনি হতাম না। এক ভাইয়ের হাত,আর এক ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গাতে হতো না। আমরা কেন, কারণে  অকারনে আমরা - ওরা বহিরাগত, এসব বিচার করে সমাজ কে বিভাজন করবো। শুধু সমাজ কে বিভাজন নয়, সেই সঙ্গে নিজেরাও সমাজের থেকে বিচ্ছিন্ন হচ্ছি প্রতিনিয়ত। এটা মনে রাখতে হবে  আমরা সকলেই এক ভারত মায়ের সন্তান। আমরা ভারতবাসী, শুধু এটাই হোক আমাদের পরিচয়। একটা কথা মনে রাখবেন রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয় উলু খাগড়ার প্রাণ যায়।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ভোজ্য পত্র কি ? আসল ও নকল ভোজ্য পত্র চিনবেন কিভাবে ?

বারো মুখী রুদ্রাক্ষের উপকারিতা ও ব্যবহার বিধি !

স্বপ্ন দোষ ? কালসর্প দোষ ? বশীকরণ বা কর্মে সাফল্য চান? তাহলে জানুন ময়ুর পালকের কিছু অসামান্য গুনাগুন!