রত্ন, যন্ত্রম ও মূল এই তিনটি দ্রব্যের মধ্যে কোনটি বেশি কার্যকারী? এবং তাদের গুণাগুণ কি?
রত্ন, যন্ত্রম ও মূল এই তিনটি দ্রব্যের মধ্যে কোনটি বেশি কার্যকারী! প্রথমেই বলে দেওয়া ভালো এর উত্তর আমার সঠিক জানা নেই। তবে এই টুকু জানি যে, তিনটি বস্তু সম্পূর্ণ পৃথক হলেও এদের উদ্দেশ্য কিন্তু এক।
আগে একটা সময় ছিলো, যখন জ্যোতিষীরা শুধু মাত্র রত্ন প্রেসক্রাইব করতেন। আবার অনেক সময়ে রত্নের বিকল্প হিসেবে গাছের মূল ধারণ করার পরামর্শ দিতেন। কিন্তু এখন এসব অতীত! কিন্তু কেন?
হীরে
কারণ রত্ন অনেক সময়ে সাধারণ মানুষের কাছে দুর্মূল্য হয়ে যায়। এই দুর্মূল্যের কারণে সাধারণ মানুষের কাছে রত্ন ধরা ছোঁয়ার বাইরে হয়ে যায়। এছাড়া ঠকে যাবারও একটা ভয় থাকে। যেমন ধরুন আপনার শুক্র খারাপ, আপনাকে জ্যোতিষী হীরা ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু জ্যোতিষী বললেই তো আর হলো না, আপনার পকেটের কথাটাও তো আপনাকেই ভাবতে হবে নাকি। তখন জ্যোতিষী আপনাকে হীরের বিকল্প হিসেবে ভালো কোয়ালিটির জারকন ব্যবহারের পরামর্শ দিলেন।
জারকন
আপনি জ্যোতিষী কে জানালেন যে, এই মাসে তা সম্ভব নয়। সামনের মাসে হয়তো হবে। তবে অবশ্য হীরের তুলনায় জারকনের দাম অনেকটাই কম, একদম সাধারণের নাগালের মধ্যে।
রামবাসক
রামবাসক
একান্ত ভাবে তাও যদি সম্ভব না হয়, তাহলে নিরুপায় হয়ে তখন বিকল্প হিসেবে রাম বাসক গাছের মূল দেওয়া হয়। আপনি যতদিন জারকন কিনে না ব্যবহার করতে পারেন, ততদিন রাম বাসকের মূল ব্যবহার করবেন বলে ঠিক করলেন। যেমন ভাবা তেমনি কাজ। আপনি আপনার পরিচিত এক মূল বিক্রেতার কাছ থেকে রাম বাসকের মূল কিনে ব্যবহার করতে শুরু করলেন। একমাস, দুই মাস, বা ছয় মাস ব্যবহার করলেন, কিন্তু কোনো কাজ হলো না। কি ভাবছেন ? জ্যোতিষীর দোষ ! না জ্যোতিষীর কোনো দোষ নেই। আপনি তাকে বিশ্বাস করেন, এবং অবশ্যই বিশ্বাস করা উচিত। তাহলে তার কথন অনুসারে আপনাকে জারকন কিনতেই হবে, তাইতো? যখন দেখলেন জারকন ব্যবহার করেও কোনও পরিবর্তন হলো না, তখন কি করবেন? হীরে কিনবেন? কি ভাবছেন? না এতে ভাববার কিছুই নেই! আমি বলবো আপনার হীরে বা জারকন কোনটারই দরকার ছিল না, ঐ রাম বাসকেই কাজ হতো, যদি সেটি সঠিক হতো। বাজারে রাম বাসক বলে যেটি বিক্রি হয়, সেই গাছটির নাম সিংহ পুচ্ছ! এই গাছ সাধারণত গ্রাম অঞ্চলের দিকে বাঁশ বনে জন্মায়। এর উচ্চতা সাধারণত দেড় থেকে দুই ফুট হয়। এরকম আরো অনেক উদাহরণ আছে। নীলা বা নীলম
যেমন ধরুন কোনো ব্যক্তির শনির দশার জন্য নীলমের প্রয়োজন। যাকে আমরা চলতি বাংলায় নীলা বলে জানি। আসল ভালো নীলার দাম অনেকটাই বেশি। তার বিকল্প রত্ন হিসেবে রয়েছে এমিথিষ্ট পাথর। যা অনেকটাই কম দাম। একেবারেই সাধারণের নাগালের মধ্যে।
আবার এর বিকল্প শ্বেত বেঁড়েলার মূল, যা মোটেও সহজলভ্য নয়! বাজারে শ্বেত বেঁড়েলা বলে যেটি বিক্রি হয়, সেটি আদতে হলদে বেড়েলা, এর ফুল হয় হলুদ। এইটি গ্রামাঞ্চলের দিকে শক্ত পাথুরে জমিতে জন্মায়। আবার রেল লাইনের ধারেও দেখতে পাওয়া যায়। আবার রাহুর দশায় রয়েছে গোমেদ। যদিও এর মূল্য সাধারণের নাগালের মধ্যে। এর বিকল্প হিসেবে রয়েছে শ্বেত চন্দনের মূল। এই মূল আমাদের এই বাংলায় সত্যি বড় দুর্লভ! এটা মূলতঃ দক্ষিণ ভারতে পাওয়া যায়। গোমেদ
তবে আমি বলবো ভালো উৎকৃষ্ট মানের গোমেদের দাম খুব বেশি নয়, এটা একেবারেই সাধারণের নাগালের মধ্যে। তাই আমি বলবো, এক্ষেত্রে কষ্ট হলেও আপনি গোমেদ ব্যবহার করুন, তাতে অবশ্যই সুফল পাবেন। আপনার পক্ষে সেটাও যদি সম্ভব না হয়, তবে আর একটি ভালো উপায় আছে। তবে এটা যে শুধু রাহুর দশায় কাজ করে তাই নয়, উপরন্তু শনি ও রাহুর দশায় একসাথে কাজ করে, এর থেকে ভালো উপায় আর হতে পারে না।
ঘোড়ার নালের আংটি
ঘোড়ার নালের আংটি
আর তা হলো আগুনে না পুড়িয়ে কালো ঘোড়ার নাল দিয়ে তৈরী আংটি। ব্যবহার করুন ভালো সুফল পাবেন। যদি এতো কিছু করেও আপনার গ্রহ শান্তি না হয়, তবে আর একটি উপায় আছে, তাহলো যন্ত্রম! যন্ত্রম
এক্ষেত্রেও সঠিক পূজা পদ্ধতি ও অনেক নিয়ম বিধি আছে, যদি সঠিক ভাবে তা পালন করতে পারেন, তাহলে আর কোন চিন্তাই নেই। আমি এর পরের প্রতিবেদনে ধারাবাহিক ভাবে যন্ত্রম বিষয়ক আলোচনা করবো, সেই জন্য আমার এই পেজ ফলো করুন, ও লাইক দিন।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন