নয় মুখী রুদ্রাক্ষের উপকারিতা......



নমস্কার পাঠক বন্ধু, আজ আমার আলোচ্য বিষয় নয় মুখী রুদ্রাক্ষ। এই নয় মুখী রুদ্রাক্ষের প্রকৃত স্বরূপ কি? এবং এই রুদ্রাক্ষ ব্যবহার করলে কি ফল পাওয়া যায়। আজ অতি সংক্ষেপে আমি আমি আমার সাধ্যমত এই বিষয়ের উপর আলোকপাত করার চেষ্টা করছি।



রুদ্রাক্ষ মাত্রই অলৌকিক, এ কথা আমি এর আগের বেশ কয়েকটি পর্বে উল্লেখ করেছি দৃঢ়তার সঙ্গে ! আমরা জানি যে, বাজারে সাধারণত ১থেকে ২১ মুখী পর্যন্ত রুদ্রাক্ষ পাওয়া যায়। আর প্রতিটি রুদ্রাক্ষেরই কিন্তু আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য ও বিশেষত্ব আছে, বা বলতে পারেন বিশেষ গুন আছে। তাই  অন্যান্য রুদ্রাক্ষের মতো এই নয় মুখী রুদ্রাক্ষেরও বিশেষ গুন আছে।


এই নয় মুখী রুদ্রাক্ষ হলো মা দুর্গার নয় টি রূপ বা নয়টি গুনের আধার। অর্থাৎ সাক্ষাৎ শিব প্রিয়া শক্তি স্বরূপিনি মা দুর্গার স্বরূপ এই নয় মুখী রুদ্রাক্ষ। এই রুদ্রাক্ষের নিয়ন্ত্রক গ্রহ হলো কেতু। 


এবার আলোচনা করা যাক রুদ্রাক্ষের গুনাগুন সম্পর্কে।

এই রুদ্রাক্ষ ধারণ করলে, আত্ম শক্তি বৃদ্ধি পায়, সেই সঙ্গে আধ্যাত্মিক শক্তি, মানসিক শক্তি, কল্পনা শক্তি ও স্মরণ শক্তি বৃদ্ধি পায়। এবং ব্যাক্তির জ্ঞানের পূর্ণ বিকাশ ঘটে।


এই রুদ্রাক্ষ ধারণ করলে, সকল প্রকার নৈরাশ্য, আলস্য দুর হয়ে  দুঃখ কষ্টের বিনাশের মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের ওপরে ভক্তি এবং মুক্তি লাভ সম্ভব হয়

এবং ধারণকারী ব্যাক্তি সম্পূর্ণ ভাবে কর্মোদ্যেগী হন।

এটি ধারণের ফলে সকল প্রকার সমস্যা যেমন চক্ষু, চর্ম, মস্তিষ্ক , ও  যৌন ব্যাধির প্রতিকার সহ সকল প্রতিবন্ধকতাকে সহজেই জয়লাভ করা যায়। এছাড়াও দুর্ঘটনা ও অকাল মৃত্যুর হাত থেকেও রক্ষা পাওয়া যায়। 

এই রুদ্রাক্ষ ধারণের ফলে ধারকের জীবনে শক্তি সঞ্চারিত হয়, ভয় দূর হয়। যারা বারবার বাধাগ্রস্ত হন, সময়কালে বুদ্ধি ভ্রম ঘটে থাকে তারা নয়, আঠারো, সাতাশ মুখী অর্থাৎ তিনটে নয় মুখী রুদ্রাক্ষ একসঙ্গে ধারণ করতে পারেন। এই রুদ্রাক্ষকে ন' দেবীর স্বরূপ মনে করা হয়। আপনি যদি পর্যটন ব্যবসার সাথে যুক্ত থেকে সমাজে প্রতিষ্ঠার ইচ্ছুক হন, তাহলে এই রুদ্রাক্ষ তো অবশ্যই ধারণ করা উচিত।



যেকোনো রুদ্রাক্ষ ধারণের পূর্বে তার শোধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তবেই তা ধারণ করা উচিত।




রুদ্রাক্ষের শোধন ও প্রাণ প্রতিষ্ঠা পুজোর বিধি:




শোধন প্রক্রিয়া হওয়া উচিত যেকোনো সোমবার। অথবা ভগবান শিবের বিশেষ দিনে।



শোধন প্রক্রিয়া শুরু করার পূর্বে যা করতে হবে তাহলো, -  পূজা স্থলে ঈশান কোণে অর্থাৎ উত্তর-পূর্ব দিক অথবা পূর্ব দিকে মুখে করে বসতে হবে। প্রথমে ভালো করে রুদ্রাক্ষটিতে চন্দনের প্রলেপ লাগিয়ে দিতে হবে, তারপর দুধ মিশ্রিত গঙ্গাজলে রুদ্রাক্ষটিকে ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এই ভাবে পরিষ্কার করার পর রুদ্রাক্ষটি শিব ঠাকুরের ছবি বা মূর্তির সামনে একটি পরিষ্কার কাপড়ের ওপর রাখুন। কারণ এমনটা বিশ্বাস করা হয়ে থাকে যে, দেবাদিদেব মহাদেবের নয়ন অশ্রূ থেকেই নাকি রুদ্রাক্ষের জন্ম হয়েছিল। অর্থাৎ রুদ্রাক্ষ ভগবান শিবের প্রতিক বা অংশ বিশেষ। তাই রুদ্রাক্ষের পুজো করা উচিত সর্বদা হবে ভগবান শিবের সামনে এবং শিব জ্ঞানে। প্রসঙ্গত, এক্ষেত্রে আরেকটা জিনিস মাথায় রাখা একান্ত প্রয়োজন। তা হল, রুদ্রাক্ষটি রাখতে হবে পরিষ্কার একটি কাপড়ের উপরে। তারপর জল, দই, দুধ, মধু এবং ঘিয়ের সাহায্যে শিব ঠাকুরের মূর্তি এবং রুদ্রাক্ষটি ভাল করে একসাথে স্নান করাতে হবে। এরপর ধুপ-ধূনো জ্বেলে পাঠ করতে হবে “ওম নম শিবায়” মন্ত্রটি। আর সব শেষে রুদ্রাক্ষের প্রকৃতি অনুসারে মন্ত্র জপ করে শেষ করতে হবে পুজো। 


এর মন্ত্র হলো - ওঁ হ্রীং হূং নমঃ


 এটি ধারণের মন্ত্র হলো ------ ওঁ হ্রীং হূং নমঃ

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ভোজ্য পত্র কি ? আসল ও নকল ভোজ্য পত্র চিনবেন কিভাবে ?

বারো মুখী রুদ্রাক্ষের উপকারিতা ও ব্যবহার বিধি !

স্বপ্ন দোষ ? কালসর্প দোষ ? বশীকরণ বা কর্মে সাফল্য চান? তাহলে জানুন ময়ুর পালকের কিছু অসামান্য গুনাগুন!