কালো ঘোড়ার নালের আংটি শনির দশায় নীলার মতোই কার্যকরী।
নমস্কার আমার সকল পাঠক বন্ধুদের আমি আমার পেজে অনেক অনেক স্বাগত জানাই। আশা করছি আপনারা সকলেই ভাল আছেন। পাঠক বন্ধু আজকের আমার বিষয় হলো, ঘোড়ার খুর বা নালের আংটি। এই ঘোড়ার খুর বা নালের আংটি সম্পর্কিত আমার ইউটিউব চ্যানেলে দুটি ভিডিও রয়েছে, তারমধ্যে একটিতে বলেছি এই নালের উপকারিতা সম্পর্কে, আর একটিতে দেখানো হয়েছে এই নাল কেটে পিটিয়ে পিটিয়ে কিভাবে আংটি তৈরি করা হয়। আমি নিজেও আমার হাতে ঘোড়ার নালের আংটি দীর্ঘদিন ধরে ধারণ করে আছি, যদি বলি আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও বিভিন্ন জ্যোতিষীর বয়ান অনুযায়ী যে যদি আংটি তার কার্যকারিতা করে শুভ ফল প্রদান করে, বা আংটি ধারণের কারনে সময় যদি আপনার অনুকূলে হয়, তাহলে আংটির উজ্জ্বল্যতা অনেকাংশে রৌপ্যের মতো বৃদ্ধি পায়। একটা কথা মাথায় রাখবেন, এই আংটি টি কিন্তু সম্পূর্ণ আগুনে না পুড়িয়ে বানানো হয়। আগুনে পুড়িয়ে তৈরি করলে সেটা শুভ ফল প্রদান করে না। আংটি টি সবসময় চেষ্টা করবেন একটু সামান্য ঢিলে পড়ার, এতে হাত ভালো থাকে। এর মুল কারণ গরম আর শীতে কিন্তু তাপমাত্রা অনুযায়ী আমাদের শরীরের তারতম্য ঘটে।
আপনাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো বলবেন অরিজিনাল পাওয়া যায় না, ডুপ্লিকেট বাজারে বিক্রি হয়। তাদের অনুরোধ করবো অবশ্যই তাহলে আমার ইউটিউব চ্যানেলের সেই ভিডিওটি দেখুন, যে ভিডিওতে আংটি বানিয়ে দেখানো হয়েছে। নিচে তার লিঙ্ক দেওয়া হলো।
👇👇👇👇
https://youtu.be/Wq0O9PVhxSk
জ্যোতিষ শাস্ত্র মতে শনিদেবের প্রিয় রত্ন হলো নীলা বা নীলম বা নীল কান্ত মনি, আসলে এই তিনটি বস্তু একই। এই নীলার বিকল্প রত্ন হলো এমিথিষ্ট বা জ্যামনিয়া। আবার এমিথিষ্টেরও কিন্তু বিকল্প অনেক রত্ন উপরত্ন রয়েছে। আবার এই রত্নের বিকল্প হলো গাছের শিকড়। তাহলো শ্বেত বেড়েলার মূল। আবার শ্বেত বেড়েলার বিকল্প হলো দুটো ধাতু, তাহলো লোহা আর সীসা। তাহলে আমি প্রথমে নীলার কথায় আসি। জ্যোতিষ হয়তো আপনার গ্রহ দশা বিচার করে আপনাকে খুব শিগগিরই একটি ভালো নীলা ব্যবহার করতে বলেছেন। নাহলে হয়তো আপনি আরও বিপদের সম্মুখীন হবেন।
কিন্তু জ্যোতিষী বললেই তো আর সম্ভব হয় না। আপনার পকেটের কথাটাও চিন্তা করতে হবে। কারণ একটা ভালো নীলা যদি সংগ্রহ করতে যান, আপনার পড়তে পারে পাঁচ হাজার থেকে দশ হাজার টাকা প্রত্যেক রতি। যদি পাঁচ রতি নীলা ক্রয় করেন, তাহলে তার দাম পড়বে মিনিমাম ২৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা। তাহলে এই পরিমাণ টাকা টা নিশ্চয়ই সবার পক্ষে সম্ভব নয়। তাহলে সেই ব্যক্তি বিকল্পের দিকে ঝুঁকবেন। বিকল্প নিতে গেলে তাকে নিতে হবে এমিথিষ্ট। একটা ভালো এমিথিষ্ট সংগ্রহ করতে গেলেও পড়বে মিনিমাম ৮০ থেকে ১০০ টাকা রতি। এবং এর কম বা বেশি ও হতে পারে। তা নির্ভর করে আপনি কোথা থেকে নিচ্ছেন, কার কাছ থেকে নিচ্ছেন! এছাড়াও এমিথিষ্টের বিকল্প অনেক রত্ন উপরত্ন রয়েছে। সেই বিষয়ে আমি পড়ে অন্য কোনো সময়ে অবশ্যই আলোচনা করবো। এবং এই এমিথিষ্ট কিনতে গেলেও কিন্তু আপনাকে ঠকতে হতে পারে। কারণ এই এমিথিষ্টের ও দুই রকম আছে। এক অরিজিনাল এমিথিষ্ট, যার কালার অনেকটা হালকা, এবং এর মধ্যে রেসা , বাবলস অনেক সময়ে চেরা ফাটা টাইপের দাগি থাকে যা দেখলে হয়তো আপনার পছন্দ নাও হতে পারে। পছন্দ না হলে কি করবেন? তখন নকল নিতে যাবেন । কারণ নকল এর থেকে অনেক বেশী সুন্দর এবং কালার ও খুব ভালো। পরে বলবেন কাজ হচ্ছে না, বা কম হচ্ছে, কিন্তু কাজ হচ্ছে, আসলে কালারে কাজ হচ্ছে। এইবার তাহলে আপনি কি করবেন? বিকল্প হিসেবে গাছের মূল ব্যবহার করবেন? গাছের মূলেও একটা সমস্যা রয়েছে। এই গাছের মূল হলো শ্বেত বেড়েলার মূল। এই বেড়েলা গাছ দুই প্রকারের হয়, একটা হলো শ্বেত, একটা হলো পীত। শ্বেত বেড়েলার ফুল হয় সাদা, পীত বেড়েলার হলদে। আপনি মূলের দোকানে গেলে হয়তো এই ফুল গুলো দেখতে পাবেন না। তবে এখন চাষ হওয়ার কারণে আসল শ্বেত বেড়েলা পাওয়া গেলেও যেতে পারে। এই শ্বেত বেড়েলার মূল কালো সূতো দিয়ে হাতে অথবা কোমড়ে পড়তে হবে, এবং তা খুব কম মূল্যে আপনি পেয়ে যাবেন, হয়তো পাঁচ টাকা কি দশ টাকা।
যাই হোক এবার এর একটা সমস্যা হলো কি, এইটি প্রত্যেক টি মাসে নির্দিষ্ট সময়ে আপনাকে বদল করতে হতে পারে শুকিয়ে যাওয়ার আগে পর্যন্ত।
আবার আপনি ভূলে গেলে হয়তো নাও বদল করতে পারেন। এইবার কি করবেন, আপনি বিকল্প খুঁজবেন, যেটা আপনাকে হয়তো বেশি ঝামেলা পোয়াতে হবে না। তার জন্য কি করবেন, আপনি ধাতু ব্যবহার করবেন। এই ধাতু কি? লোহা আর সীসা।
লোহার কথায় আমি পরে আসছি। প্রথমে সীসার কথা বলি। সীসা এমন একটি ধাতু আমরা জানি যেটি টেলিফোনের কেবিলে ব্যবহার হয় বা ব্যাটারি নির্মানের কাজেও ব্যবহার হয়। অনেক জ্যোতিষী বলে থাকেন সীসার আংটি ব্যবহারের কথা, কিন্তু আমি বলবো সীসার আংটি যথা সম্ভব এড়িয়ে যাবেন। কারণ সীসা একটি নরম ধাতু। যদি আমরা আংটি হিসেবে ডান হাতে ব্যবহার করি, এবং আমরা যখন সেই হাত দিয়ে খাদ্য গ্রহণ করি, সেই খাদ্যের সাথে এই ধাতুর কষ বা এর ক্ষয় হয়ে যাওয়া ধাতুর টুকরো অংশ আমাদের শরীরে প্রবেশ করতে পারে। যার ফলে আমরা মারাত্মক ব্যাধিতে আক্রান্ত হতে পারি। অনেক সময় মারণ ব্যাধী ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারি। তাই এই সীসার আংটি টিকে যথা সম্ভব আমরা এড়িয়ে যাবো। এবং সীসার ধাতব গুলি অথবা বাজুর মতো করে হাতে অথবা কোমড়ে কালো সূতো দিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। সীসাতে যদি সমস্যা হয়, না পড়তে চান তাহলে আপনি লোহা ব্যবহার করুন। তবে লোহা প্রধানতঃ রাহুর দশায় কাজ করে। আর শনির ক্ষেত্রে কিন্তু যে সে লোহা কাজ করবে না। তার একটি প্রধান শর্ত আছে! কি সেই শর্ত? তাহলো সেই লোহা টি আগুন ছাড়া হতে হবে। অর্থাৎ আগুনে কখনো স্পর্শ করা হয়নি এমন লোহা! ধ্যাত, তাই আবার হয় নাকি? আগুন ছাড়া লোহা। আমরা আমাদের চারপাশে যে লোহাই দেখতে পাই না কেন, আগুনে গলিয়ে কিন্তু তার আকৃতি দেওয়া হয়। তার মধ্যে পেড়েক হতে পারে, বা এই ঘোড়ার নাল বা খুর হতে পারে।এটাও কিন্তু আগুনের। কিন্তু এমন কি লোহা আছে যে কাজ করবে? আছে, লোহা...দুই রকম লোহা আছে, তার মধ্যে হলো ঘোড়ার খুর বা নাল একটা, আর হচ্ছে নৌকার গজাল পেরেক একটা। যে কোনো একটাই করতে পারেন। অথবা দুটোই ব্যবহার করতে পারেন, কোনো অসুবিধা নেই। এই পেরেক নিয়ে আমি পরের সংখ্যা তে বিস্তারিত ভাবে অবশ্যই আলোচনা করবো । তার জন্য আমার পেজটিতে অবশ্যই ফলো রাখবেন। এছাড়াও আমার ইউটিউব চ্যানেলেও নজর রাখতে পারেন।
আমার আজকের আলোচনার বিষয় ঘোড়ার খুর নিয়ে। কিন্তু এই খুর কেন ও কিভাবে কাজ করে ? কারণ খুরটা লোহার, এবং গলিয়ে এর আকৃতি দেওয়া হয় ঠিকই, কিন্তু নতুন খুর যখন ঘোড়ার পায়ে দীর্ঘ ব্যবহারের ফলে ক্ষয়ে যায় এবং সেই খুরটা যখন ঘোড়ার পায়ে ব্যবহার হয়, রাস্তা দিয়ে যখন ঘোড়া টা চলে, তখন রাস্তায় একটা ঘর্ষণ হয়, ঘর্ষণের ফলে একটা তাপ শক্তি উৎপন্ন হয়, এই তাপ শক্তি রূপান্তরিত হয় তরিতে, তরিৎ শক্তি রূপান্তরিত হয় চৌম্বকীয় শক্তিতে। এবং এই চৌম্বকীয় শক্তিটাই কিন্তু পজেটিভ শক্তি। আর এই পজেটিভ শক্তিটাই আমাদের প্রধান দরকার বা প্রয়োজন নিজেদের মধ্যে আত্মস্থ করার জন্য। বা নিজেদের মধ্যে সেই ক্ষমতা কে আত্মস্থ করার জন্য। তাই আমরা এই খুর ব্যবহার করবো।
কিন্তু কেন? কেন শনির দশায় ঘোড়ার খুর কাজ করে, এবং প্রশ্ন হলো তা কি নীলার মতোই কাজ করে? হ্যাঁ ১০০ শতাংশ নীলার মতোই কাজ করে। আপনি যদি নীলা ব্যবহার নাও করেন, খুর ব্যবহার করে দেখবেন এবং বিধি অনুযায়ী শোধন করে নেবেন, অবশ্যই ১০০ শতাংশ কাজ করবে। শনির যেকোনো দশা, যেমন আড়াই অর্থাৎ আড়াই বছরের দশা, সাড়ে সাত বছরের দশা অর্থাৎ সাড়ে সাতি, বা ১৯ বছরের মহা দশা, যেকোনো দশায় একদম নীলার মতোই কাজ করে। এবার আসি কেন কাজ করবে......
হিন্দু পুরাণ অনুসারে সূর্য্য ও ছায়ার পুত্র শনি। ভগবান শ্রীহরি বিষ্ণু তার আরাধ্য ঈশ্বর। স্বয়ং দেবাদিদেব মহাদেব তার পরম গুরু। মহাদেবের ইচ্ছাতেই তিনি সমগ্র সৃষ্টি ও ব্রহ্মান্ডের ন্যায়ের অধিপতি। যার থেকে দেবতারাও রেহাই পান না। সমগ্র প্রাণীর কর্মফল তিনিই দান করে থাকেন। তার আরাধ্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মতো তিনিও কর্মকে প্রাধান্য দেন। কর্মই পরম ধর্ম, কর্মই পূজা, কর্মই তপস্যা, আর তপস্যাই প্রাণীকে শোধিত করে। পরিশ্রমই তপস্যা, আর পরিশ্রমের দ্বারাই ফল প্রাপ্তি হয়।
যে প্রাণী পরিশ্রম করে, সেই প্রাণীর প্রতি তিনি সবসময় সু- দৃষ্টি দান করেন। এবং সেই প্রাণীর থেকে জগৎ সংসার কে শিক্ষা নিতে নির্দেশ করেন। সবদিক থেকে বিচার করলে, সমস্ত প্রাণীকুলের মধ্যে ঘোড়া একমাত্র সবথেকে বেশি পরিশ্রম করতে সক্ষম। এবং ঘোড়ার পরিশ্রম করার ক্ষমতা কে নিজেদের মধ্যে জাগৃত করার জন্য তার প্রতিক হিসেবে আমরা তার পায়ের নিচে ক্ষয় হয়ে যাওয়া লোহার খুর ব্যবহার করতে পারি। সেটা অবশ্যই হতে হবে ঘোড়ার পরিশ্রমের ফলে ক্ষয়ে যাওয়া খুর।
শুধু তাই নয়, এবং সেটা হতে হবে কালো ঘোড়ার! কারণ প্রকৃতিগত দিক থেকে কালো ঘোড়া স্বভাবতই ত্বেজী শক্তিশালী ও অধিক পরিশ্রমে সক্ষম। এছাড়াও পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে শনি দেবের মাতা ছায়া, যা আলোর বিপরীত। এবং সেই কারণে তার প্রিয় রঙ অবশ্যই কালো। এই খুর আমরা ঘরের বাইরে দরজার ওপরে লাগিয়ে রাখতে পারি। এছাড়া হাতের আংটি ও বালা রূপেও ব্যবহার করা যায়। তবে হ্যাঁ অবশ্যই তা বানাতে হবে আগুনে না পুড়িয়ে। আংটি পড়তে হবে ছেলেদের ডান হাতের মধ্যমা, ও মেয়েদের বাঁ হাতের মধ্যমা আঙ্গুলে।
প্রিয় পাঠক বন্ধু, আজ এই পর্যন্তই। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
ধন্যবাদ !
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন