কালসর্প দোষ থেকে মুক্তি পেতে শিবরাত্রির দিন করুন বিশেষ উপায় ‌। kaal sarp dosh .

কালসর্প দোষ থেকে মুক্তি পেতে শিবরাত্রির দিন করুন বিশেষ উপায় ‌। kaal sarp dosh

Kaal-sarp-dosh-dhar-arts


 .Kaalsarp Dosh And Mahashivratri:

আমার সকল পাঠক বন্ধু দের, আমি আমার স্বাগত জানিয়ে শুরু করছি আজকের প্রতিবেদন।


জ্যোতিষ শাস্ত্রে কালসর্প দোষকে কোষ্ঠীর অত্যন্ত অশুভ দশা বলে মনে করা হয়। এর কারণ মূলত রাহু আর কেতু …!


রাহু ও কেতু হল ছায়া গ্রহ।  সেই সঙ্গে জ্যোতিষ গণনার বিশেষ দুটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। জ্যোতিষ গণনায় রাহু হল উত্তর মেরু এবং কেতু হল দক্ষিণ মেরু। কালসর্পের মুখের দিকটা হল রাহু এবং লেজের দিক টা হল কেতু। রাহু ও কেতু সব সময় বক্রীদশায় অবস্থান করে। এমন পরিস্থিতিতে বাকি সাতটি গ্রহ রাহু ও কেতুর মাঝখানে চলে আসে, আর তখন কোষ্ঠীতে কালসর্প যোগ তৈরি হয়।

Kaal-sarp-dosh-mukti-upay


জ্যোতিষ শাস্ত্রে মোট ১২ ধরনের কালসর্প দোষের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। শনির সাড়ে সাতির ক্ষতিকর প্রভাব কে কিছুটা হলেও এড়ানো যায়, কিন্তু কালসর্প দোষের প্রভাবে জাতকের জীবন সম্পূর্ণ ভাবে ধংস হয়ে যায় । কালসর্প দোষের প্রভাবে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করেও সাফল্য পাওয়া যায় না। সেই সঙ্গে সামাজিক সম্মানহানি ও চুড়ান্ত আর্থিক ক্ষয়-ক্ষতি তো হয়ই। এমত অবস্থায় মনের মধ্যে আত্মহত্যার মতো নানা ধরনের নেতিবাচক চিন্তাও উঁকি দিতে থাকে কালসর্প দোষের প্রভাবে। সেই কারণেই কালসর্প দোষের মধ্যে যথেষ্ট ভয়ের কারণ রয়েছে বৈকি। তাহলে এর থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় কি ?


মহাশিবরাত্রি মহাদেবের আরাধনার জন্য দিনটি অত্যন্ত শুভ। আমরা জানি যে মহাদেবের গলার বিশেষ অলঙ্কার হলো সাপ,আর এই সাপ যে সে সাধারণ কোনো সাপ নয়, এই সাপ হলো নাগের নাগ ভগবান অনন্ত শেষ নাগের অনুজ নাগরাজ বাসুকী। তাছাড়া সাপেদের দেবী অর্থাৎ সর্পদেবী মা মনসা স্বয়ং শিবের কন্যা। পুরাণ অনুসারে  তাই মনে করা হয় মহাদেবের সঙ্গে নাগ বংশের সঙ্গে বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। তাই মহাশিবরাত্রিতে বিশেষ কয়েকটি উপায় করলে সহজেই কালসর্প দোষ থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে।



এখন প্রশ্ন হলো কি করে বুঝবেন আপনার জন্ম কুন্ডলীতে কালসর্প দোষ রয়েছে কি না 


কালসর্প দোষ বোঝার উপায় ঃ*

কারোর জন্মছকে কালসর্প দোষ থাকলে শিক্ষাক্ষেত্রে নানা প্রকার বাধা আসে। বারবার মানসিক চাপ ও কষ্টের মধ্যে পড়তে হয় জাতক কে।


* কোষ্ঠীতে যদি কালসর্প দোষ থাকে, তাহলে জাতকের কেরিয়ারে নানা দিক থেকে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। চাকরি পেতে পেতেও বারবার হাতছাড়া হয়ে যাবে ওই ব্যক্তির। বা চাকরি পেলেও সেই চাকরি হবে ক্ষণস্থায়ী। কোনও এক নির্দিষ্ট চাকরিতে  মন থেকে টিকতে পারবেন না সেই ব্যক্তি। ব্যবসাতেও একই ভাবে বারবার ক্ষতির মুখে পড়তে হবে তাঁকে।


* কালসর্প দোষের প্রভাবে মনের মধ্যে নানা ধরনের খারাপ চিন্তা উঁকি দেয়। এমনকি কখনো কখনো আত্ম হত্যার পরিকল্পনাও জাতকের মনে আসতে পারে। কোনো কাজ শুরু করার আগেই মনের মধ্যে জড়ো হওয়া পরাজয়ের ভয়ে কুঁকড়ে যায় জাতক।



* সন্তানের জন্ম দিতে গিয়েও সমস্যায় পড়তে হতে পারে কালসর্প দোষে আক্রান্ত গর্ভধারিনী মাকে।


তাই যদি আপনার জন্ম কোষ্ঠীতে কালসর্প দোষ থাকে, তাহলে এই মহাশিবরাত্রিতে অবশ্যই পালন করুন কালসর্প দোষ থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়গুলি।


আসলে রাহু-কেতু থেকে কোনও গ্রহ বিচ্ছিন্ন হলে কাল সর্পের অশুভ প্রভাব কমে যায়। কালসর্প যোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ভগবান আশুতোষ শিবের উপাসনা করা সর্বোত্তম এবং পরীক্ষিত উপায়। এর জন্য গৃহে পারদ শিবলিঙ্গের প্রতিষ্ঠা করুন প্রতিদিন আপনাকে ভগবান শিবকে ইষ্টদেব মনে করে তার আরাধনা করতে হবে, অবশ্যই সোমবার। এছাড়াও গৃহের অথবা মন্দিরে শিবলিঙ্গ দর্শন করুন এবং নিয়মিত ওম নমঃ শিবায় জপ করুন। এছাড়া প্রতি সোমবার শিব মন্দিরে শিবলিঙ্গে বিল্ব পত্র ও দুধ অর্পণ করুন এবং এই কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে ভগবান শিবের কাছে প্রতিনিয়ত প্রার্থনা করুন। মাস তিনেক পর থেকেই ধীরে ধীরে শুভ প্রভাব লাভ করবেন।



* যদি সম্ভব হয়  মহাশিবরাত্রি ও ভগবান শিবের পুজার বিশেষ বিশেষ তিথিতে উজ্জ্বয়িনীতে অবস্থিত মহাকালেশ্বর মন্দির অথবা নাসিকের ত্র্যাম্বকেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গ বা প্রয়াগরাজে তক্ষালেশ্বর মন্দিরে শিবলিঙ্গের রুদ্রাভিষেক করুন। এর ফলে কালসর্প দশা থেকে শীঘ্রই মুক্তি পাবেন।


* কালসর্প দোষ থেকে মুক্তি পেতে যা অবশ্যই করনীয়, তাহলো



মহা শিবরাত্রি তে শিবলিঙ্গে এক জোড়া রুপোর সাপ 🐍 নিবেদন করুন।


* মহাশিবরাত্রিতে দিনের বেলা স্নান পর্ব সারার পর  ভগবান শিবের সামনে বসে ভক্তি ভাবে ১০৮-বার মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র জপ করুন।


* মহাশিবরাত্রিতে অবশ্যই জপ করুন, 'ওম নাগকুলায় বিদ্মাহে বিষদন্তায় ধিমাহি তন্নো সর্প প্রচোদয়ত্‍'।


* মহাশিবরাত্রিতে অবশ্যই উপবাস রেখে নিয়ম মেনে মহাদেবের আরাধনা করুন।

দর্শক বন্ধু আজ এই পর্যন্তই। আপনার মূল্যবান মতামত অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে আমাকে জানাবেন। ভালো লাগলে লাইক শেয়ার এবং চ্যানেলটিকে সাবস্ক্রাইব করতে ভুলবেন না। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন, শীঘ্রই ফিরছি আবার নতুন কোনো বিষয় নিয়ে, ধন্যবাদ 🙏🙏🙏🙏

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ভোজ্য পত্র কি ? আসল ও নকল ভোজ্য পত্র চিনবেন কিভাবে ?

বারো মুখী রুদ্রাক্ষের উপকারিতা ও ব্যবহার বিধি !

স্বপ্ন দোষ ? কালসর্প দোষ ? বশীকরণ বা কর্মে সাফল্য চান? তাহলে জানুন ময়ুর পালকের কিছু অসামান্য গুনাগুন!